ভালো ক্রিকেটার শুধু নন হতে চান ভালো মানুষ। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মশরাফির এটাই আকাঙ্খা। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সাথে সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন তিনি।
মাশরাফি বলেন ভাল ক্রিকেটার তো অনেকেই হতে পারে। ভাল। সঙ্গে ভাল মানুষ হওয়াটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। আমি ওই কথাটা মনে রেখেছি। ক্রিকেট তো ক’দিনের। ভাল মানুষ হিসেবে যেন সবার মনে বেঁচে থাকতে পারি। তা বলে চোট রয়েছে, সাত বার অপারেশন হয়েছে এই সহানুভূতি নিয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই না। আমার যেন ছোট ছোট কন্ট্রিবিউশন থাকে। কাল হাফিজের উইকেটটা। আমার দুটো বাউন্ডারি। এগুলোও থাকতে হবে।
জেতার পর অতি উল্রাসের মাত্রা রাখতে চান তিনি মাশরাফির কথায় ড্রেসিংরুম অবধি খুব হয়ে থাকে। ব্যস ওই পর্যন্ত। এর বাইরে হোটেলে গিয়ে আর একপ্রস্থ উল্লাস। কেক কাটা এগুলো হয় না। আমরা সব ড্রেসিংরুমেই ফেলে আসি।
গত বিশ্বকাপের সেই হতাশার কথা আজো ভুলতে পারেনি বাংলাদেশের মানুষ। ইংল্যান্ডকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আম্পায়ারদের কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে শেষ চারে খেলার স্বপ্নপূরণ হয়নি মাশরাফির দলের।
ভারতীয় সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন আপনি বলেছেন ক্রিকেটকে জাতীয়তাবাদের স্তম্ভ হিসেবে দেখাটা আপনি সমর্থন করেন না।
মাশরফি বলেন আমি নিজের মনের কথা বলেছি। আমি মনে করি দিনের শেষে খেলাটা একটা বিনোদন। তাও তো ক্রিকেট হল স্পোর্টসের একটা অংশ। পুরো খেলা নয়। সেখানে এত হিরো ওয়ারশিপের দরকার কী?
মাশরফির চোখে সবচেয়ে বড় হিরো আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁদের জন্যই তো আজ স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা রয়েছি। আমি ওদের অসম্ভব সম্মান করি। আমি সম্মান করি বৈজ্ঞানিকদের। ওঁদের এক-একটা আবিষ্কার জাতিকে কত বছর আগে নিয়ে যায়। আমি সম্মান করি ডাক্তারদের। যাঁরা মানুষের জীবন বাঁচান। এর চেয়ে মহত্ কাজ আর কী হতে পারে। আমাদের নিয়ে যত নাচানাচিই হোক, আমরা কি কারও জীবন বাঁচাতে পারছি?
টিমকে চাগাবেন কি বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের কথা বলে যে, সে দিন মেলবোর্নে ওরা আমাদের অন্যায় ভাবে হারিয়েছিল? চলো প্রতিহিংসা নিই। এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন কোনও টিমকে চার্জ করার জন্য এই প্রতিহিংসা-টিংসা বলতে হবে আমি বিশ্বাস করি না। অবশ্যই জিততে চাই। কিন্তু তার জন্য কাউকে আঘাত করে কিছু বলতে হবে কেন? টিমকে শুধু এমন অ্যাঙ্গল থেকেই মোটিভেট করতে হবে কেন? মেলবোর্নের ওই ম্যাচের রেশ আজ আমাদের মধ্যে নেইও।